শ্রীশ্রী রাম ঠাকুর🌹

ভক্তদের রোগ আকর্ষণ, লৌকিক জীবনের দুঃখ বেদনার নিরাকরণ, এসবের মূলে সদা জাগ্রত ছিল তাহাদের জন্য ঠাকুরের কল্যাণচিন্তা। ব্যবহারিক জীবনের দুঃখ তাপ, বাধা বন্ধন কাটাইয়া ভক্তেরা অধ্যাত্মজীবনের পথে আগাইয়া যাক-এই কামনাই সদা তিনি করিতেন। দেহরোগের মুক্তি ভবরোগের মুক্তির সহায়ক হইয়া উঠুক, সুক্ষ্মতর লোকের দুয়ার তাহাদের জীবনে ধীরে ধীরে খুলিয়া যাক, ইহাই একান্তভাবে চাহিতেন।
এই ভবরোগ মোচনের জন্য নিজে যাচিয়া ভক্তগৃহে গিয়াছেন, নিজে আগাইয়া আসিয়া নামমন্ত্র দিয়াছেন, এমনও ঘটিতে দেখা গিয়াছে। আর ইহার মধ্য দিয়া আত্মপ্রকাশ করিয়াছে মহা ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষের অপার করুণা।
শ্রীপ্রসন্নকুমার আচার্য্য এক ভক্তিমান ব্রাহ্মণ। তরুণ বয়সেই অন্তরে তাঁহার মুক্তির কামনা জাগিয়া উঠে, গুরুকরণের জন্য তিনি ব্যস্ত হইয়া পড়েন। ব্যাকুল হইয়া একদিন তিনি প্রভুপাদ বিজয়কৃষ্ণের কাছে উপস্থিত হন, মন্ত্রদানের জন্য ধরিয়া বসেন।
গোস্বামী প্রভু কহিলেন, "এখানে নয়, আপনার গুরু রয়েছেন অন্যত্র। কৃপালু ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষ তিনি। যথা সময়ে আপনার কাছে উপস্থিত হবেন। স্বেচ্ছায়ই তিনি যাবেন, দেবেন আপনাকে মন্ত্র। আপনি নিশ্চিন্ত হয়ে থাকুন।"
ত্রিশ বৎসর পরের কথা। প্রসন্নবাবু তখন শ্রীহট্ট জেলার এক গ্রামে শিক্ষকতা করেন। একদিন হঠাৎ দেখেন, তাঁহার দুয়ারে এক অপরিচিত দীনদরিদ্র ব্রাহ্মণ প্রশান্ত মূর্ত্তিতে দাঁড়াইয়া আছেন। কাছে যাইতেই তিনি কহিলেন, "আমি এসেছি-আপনাকে মন্ত্র দিতে।”
প্রত্যয়ভরা কথা কয়টি প্রসন্নবাবুর অন্তরের অন্তস্থলে গিয়া প্রবিষ্ট হইল। আগন্তুকের চোখ দুইটির দিকে তাকানো মাত্র কে যেন ভিতর হইতে বলিয়া দিল-' 'ওরে, ইনিই তোর সেই সংত্রাতা, গুরুদেব, যাঁর কথা গোস্বামীপ্রভু বলেছিলেন, যাঁর জন্য এই দীর্ঘকাল তুই অপেক্ষা করে আছিস।' প্রসন্নকুমার সাষ্টাঙ্গে প্রণাম নিবেদন করিলেন, দরদর ধারে ঝরিতে লাগিল পুলকাশ্রুধারা।
সেই দিনই এক শুভক্ষণে সস্ত্রীক তিনি মন্ত্র গ্রহণ করেন। পরে জানিতে পারেন, অযাচিতভাবে আসিয়া যিনি আজ তাঁহাদের কৃপা করিলেন, তিনিই ব্রহ্মবিদ্‌ মহাপুরুষ রামঠাকুর।
নামনিষ্ঠা ও শরণাগতির উপর ঠাকুর সর্ব্বদাই জোর দিতেন। বিশেষতঃ গৃহী সাধকদের পক্ষে এই সাধন পন্থাকে তিনি বেশী উপযোগী মনে করিতেন। এই নামনিষ্ঠা ও অনন্যশরণ সাধককে কোন স্তরে উঠাইয়া দিতে পারে তাহার নিদর্শন ঠাকুরের কৃপাপ্রাপ্ত এক ভাগ্যবানের জীবনে দেখা গিয়াছিল।
ক্রমশঃ
জয় শ্রীশ্রী রাম ঠাকুর।


অকাতরে প্রারব্ধ বেগ সহ্য করিয়া সকল অভাব মুক্ত হইতে চেষ্টা করিবেন।"
(বেদবাণী - ১ /৫১)
শ্রীশ্রী রাম ঠাকুর।


   প্রাক্তন সূত্রে যে সকল ভাব মনাদি ইচ্ছার বশ্যতা স্বীকার হয়, তাহাই ভ্রান্তি, সকলই মনের জল্পনা মাত্র। সকল অবস্থায় অবিচলে সহিষ্ণুতার দ্বারা ভোগ করিয়া যাইতে যাইতে প্রারব্ধমুক্ত হইয়া নির্ম্মল চৈতন্য লাভ করিয়া থাকে। পুনরায় আর ভ্রান্তিমুগ্ধ গারদ দন্ডে বন্ধন হয় না। "
(বেদবাণী - ১ /৫০)
শ্রীশ্রী রাম ঠাকুর।

 
Reviewed by শ্রী শ্রী সত্যনারায়ণ নমঃ(SriSriramthakur O gan Ganer vhovon Youtube channel) on অক্টোবর ০২, ২০২৫ Rating: 5

কোন মন্তব্য নেই:

 


Blogger দ্বারা পরিচালিত.